নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জনের মধ্যে এক পরিবারের ৩ বোন

নরসিংদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪ জনের মধ্যে এক পরিবারের ৩ বোন


সাইফুল ইসলাম রুদ্র, জেলা প্রতিনিদি, নরসিংদী।


নরসিংদীতে যাত্রীবাহী বাস ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাইভেটকার চালকসহ একই পরিবারের তিন বোন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো একজন। শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে জেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেলাব উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জঙ্গ্য়ুা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের চলনা গ্রামের মৃত আশাদুজ্জামানের বড় মেয়ে খাইরন নাহার (৩৫), মেঝ মেয়ে কামণা আক্তার (২৫), ছোট মেয়ে জামিয়া বেগম তৃশা (১৮) ও প্রাইভেটকার চালক নোয়াব আলী (৩০)। এছাড়া এ ঘটনায় গুরত্বর আহত হয় নিহত তিন বোনের খালাতো বোন রনা আক্তার।


শনিবার সকালে নিহত তিন বোনের লাশ চরসিন্দুর ইউনিয়নের চলনা গ্রামের নিজ বাড়িতে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। কান্নার রোল ওঠে পুরো গ্রামে। বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরষ নিহতদের বাড়িতে এসে জড়ো হয়। নিহতদের বাবা আশাদুজ্জামান মরা যান প্রায় ২০ বছর আগে।


অভাব-অনটনের সংসারে একমাত্র উপার্জনের হাতিয়ার ছিল বড় বোন খাইরন নাহার। তিনি লেখা-পড়া শেষ করে একটি হাসপাতালে নার্সের কাজ করতেন। মেঝ মেয়ে কামণাও সবে মাত্র লেখা-পড়া শেষ করে একটি চাকরি করার চেষ্টা করছিল।

সবার ছোট মেয়ে জামিয়া বেগম তৃশা অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। প্রতিবন্ধী একটি ভাই ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ভালোই চলছি তাদের সংসার। ছোট বোন দুটিকে লেখা-পড়া শিখিয়ে ভালো মানুষ করার চিন্তায় এখনো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়নি বড় বোন খাইরন নাহার।


কিন্তু কে জানতো?, নতুন বছর উপলক্ষে বোনদের সাথে নিয়ে বেড়াতে যাওয়াটাই হবে জীবনের শেষ বিদায়?। বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় নিমিষেই প্রাণ হারাতে হলো তাদের। নিহতদের মা হোসনে আরা বেগম জানান, নতুন বছর উপলক্ষে বেড়ানোর জন্য বিকেলে খালাতো বোন রনাকে নিয়ে খাইরন নাহার, কামণা ও তৃশা প্রাইভেটকার যোগে ভৈরবের উদ্দ্যেশে রওনা হয়।

পরে বেলাবর জাঙ্গুয়া এলাকায় পৌঁছালে আল মোবারক পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাহী বাসের সাথে প্রাইভেটকারটির সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই চালকসহ একই সঙ্গে তিন বোন নিহত হন। গুরত্বর আহত অবস্থায় রনাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।


ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পরপরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন